আইপিএলে এবার বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি মোস্তাফিজুর রহমান। প্রথম ম্যাচেই নিজের ঝলক দেখালেন বাঁহাতি এই পেসার। তার দল চেন্নাই সুপার কিংসের জন্যেও দিনটা দারুণ ছিল। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে ৬ উইকেটের জয়ে আসর শুরু করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
চিপক স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ১৭৩ রানের সংগ্রহ দাঁড় করে বেঙ্গালুরু। সেই লক্ষ্য ৮ বল হাতে রেখেই পাড়ি দেয় চেন্নাই। বেঙ্গালুরুকে বড় সংগ্রহ গড়তে না দেওয়ার পেছনে অবদান রাখেন মোস্তাফিজ। বাঁহাতি এই পেসার ৪ ওভারে ২৯ রান খরচে একাই শিকার করেন ৪ উইকেট। আইপিএলে এর আগে কখনোই এক ম্যাচে ৪ উইকেটের দেখা পাননি তিনি। শুধু তা-ই নয়, এই ম্যাচ দিয়েই স্পর্শ করেছেন আইপিএলে ৫০ উইকেটের মাইলফলক।
মোস্তাফিজ প্রথম বোলিংয়ে আসেন ম্যাচের পঞ্চম ওভারে। প্রথম ওভারেই দুই উইকেট শিকার করেন তিনি। দারুণ খেলতে থাকা বেঙ্গালুরু অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিকে বিদায় করে ব্রেকথ্রু এনে দেন এই পেসার। বলটির গতি বুঝতে ভুল করে ডিপ মিড উইকেটে উড়িয়ে মারেন ডু প্লেসি, নিচু ক্যাচটি অনেকটা দৌড়ে গিয়ে তালুবন্দি করেন নিউজিল্যান্ডের রাচিন রবীন্দ্র।
প্রথমটির পর দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পেতে মাত্র দুই বল অপেক্ষা করতে হয় মোস্তাফিজকে। দুটি বলে কোনো রানও আসেনি। ওভারের শেষ বলে তিনি বিদায় করেন রজত পাতিদারকে (০)। মোস্তাফিজের লেংথ বুঝতে না পারায় উইকেটের পেছনে মহেন্দ্র সিং ধোনির হাতে ক্যাচ দেন রজত।
দ্বিতীয়বার আক্রমণে আসতে দ্বাদশ ওভার পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হয় মোস্তাফিজকে। তবে ফিরেই ফের সাফল্য পান মোস্তাফিজ। এবার দ্বিতীয় বলেই তিনি ফেরান বেঙ্গালুরুর ওপেনার বিরাট কোহলিকে। মোস্তাফিজের স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হয়ে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে মারেন তিনি। দৌড়ে এসে ধরার চেষ্টা করলেও ভারসাম্য ধরে রাখতে পারেননি রাহানে। তবে তার ছুড়ে দেওয়া বলটি ভালোভাবেই লুফে নেন রবীন্দ্র। কোহলিকে শিকার করে আইপিএলে ৫০তম উইকেটের দেখা পান মোস্তাফিজ।
সেই ওভারেরই চতুর্থ বলে মোস্তাফিজ সরাসরি বোল্ড করে ফেরান আরেক সেট ব্যাটার ক্যামেরন গ্রিনকে (১৮)। মোস্তাফিজের ছোড়া স্লোয়ার গ্রিনের স্টাম্পে আঘাত করে। বল দিক পরিবর্তন করে গ্রিনের উইকেট কাঁপায়। প্রথম দুই ওভারে ৭ রানেই ৪ উইকেট হয়ে যায় মোস্তাফিজের। এর চেয়ে দারুণ শুরু কী হতে পারে!
কিন্তু পরের দুই ওভারে ২২ রান দেন মোস্তাফিজ। ৭৮ রানে ৫ উইকেট হারানো বেঙ্গালুরু ২০ ওভার শেষে স্কোরবোর্ডে ১৭৩ রানের লড়াকু সংগ্রহ জমা করে৷ ষষ্ঠ উইকেটে ৫০ বলে ৯৫ রানের জুটি যোগ করেন অনুজ রাওয়াত (৪৮) ও দীনেশ কার্তিক (৩৮*)।
তাড়া করতে নেমে খুব একটা বেগ পোহাতে হয়নি চেন্নাইকে। ওপেনিংয়ে ১৫ বলে ৩ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৭ রান করে দারুণ শুরু এনে দেন রবীন্দ্র। এরপর ছোট ছোট ব্যক্তিগত ইনিংসে সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় চেন্নাই। অজিঙ্কা রাহানে ২৭ রান ও ড্যারিল মিচেল ২২ রানে আউট হওয়ার পর বাকি কাজটা সারেন শিভাম দুবে ও রবীন্দ্র জাদেজা। দুবে ২৮ বলে ৩৪ ও জাদেজা ১৭ বলে ২৫ করে অপরাজিত থাকেন। বেঙ্গালুরুর হয়ে দুটি উইকেট নেন ক্যামেরন গ্রিন।