ছবি সংগৃহীত
বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় উম্মে সালমা খাতুনকে (৫০) হত্যার পর ফ্রিজে রাখার অভিযোগে তার ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমানকে (১৯) গ্রেপ্তার ও তদন্তের বিষয়ে র্যাবের কোনো সদস্যের গাফিলতি থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।
শনিবার কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
গত ১০ নভেম্বর দুপুরে দুপচাঁচিয়ার জয়পুরপাড়া এলাকায় ‘আজিজিয়া মঞ্জিল’ নামে চারতলা বাড়ির তিনতলার একটি ফ্ল্যাট থেকে উম্মে সালমা নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে ওই ঘটনায় নিহতের ছোট ছেলেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তখন র্যাব জানিয়েছিল, হাতখরচের টাকার জন্য মাকে হত্যা করে তার ছেলে লাশ ফ্রিজে রেখেছিল ছেলে। তবে পুলিশের তদন্তে ওই ঘটনায় নতুন মোড় নিয়েছে। পুলিশ বলেছে, ছেলে নয়, বাড়ির ভাড়াটিয়াই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, র্যাবের তদন্তে যদি কারও গাফিলতি পাওয়া যায়, তথ্যগত বা প্রক্রিয়াগত ভুল থাকে, র্যাবের কেউ যদি দায়ী সাব্যস্ত হয় তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, বগুড়ার ধুপচাঁচিয়ার গৃহবধূ হত্যার ঘটনায় ছেলে জবানবন্দি দিয়েছেন। সে তথ্য আমরা রেকর্ড করেছি। তাকে যখন ক্যাম্পে আনা হয় তখনও তার আত্মীয়-স্বজনরা ছিলেন। ছেলের দেওয়া জবানবন্দির ভিত্তিতেই র্যাব কাজ করেছে। তদন্তে ভিন্নতা হতেই পারে। ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও তদন্ত করছে। ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও তদন্ত করছে। পুলিশের তদন্তে যদি র্যাবের সহযোগিতা নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে, আমরা করব।
দুই সংস্থার তদন্তে ভিন্নতা কেন? নিহত গৃহবধূর ছেলে তো আদালতে অস্বীকার করায় রিমান্ডে নিতে হয়েছে। এখনো রহস্যই উদঘাটিত হলো না, কিন্তু ছেলে মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হলেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুনিম ফেরদৌস বলেন, স্বীকারোক্তি অনেক ধরনের আছে। কেউ কোনো ঘটনায় স্বীকারোক্তি দেওয়া মানেই ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করে না। আবার যিনি স্বীকারোক্তি দেবেন তিনি যেকোনো সময় তার বক্তব্য অস্বীকার, পরিবর্তন, পরিমার্জন করতে পারবেন। এটা তার আইনগত অধিকার। এখানে র্যাবের অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। তবুও ঘটনায় তদন্তে গাফিলতি তদন্ত করে দেখা হবে।
মিডিয়া ব্রিফিং সচেতনতামূলক কাজ। এখানে অন্য কোনও উদ্দেশ্য নেই। ব্রিফিং নিবারণমূলক কাজের অংশ। মানুষ যাতে শিক্ষা নেয় বা সচেতন হয়। এখানে পুলিশের তদন্ত ভুল, সেটার সুযোগ নেই। ঘটনার আরও অধিকতর তদন্ত হবে। তদন্ত কিন্তু শেষ হয়নি।
পরে গ্রেপ্তার তিনজন হলো– দুপচাঁচিয়া উপজেলার চামরুল ইউনিয়নের ইসলামপুর উত্তর সাজাপুর গ্রামের আইয়ুব আলীর স্ত্রী মাবিয়া সুলতানা হাসি, গুনাহার ইউনিয়নের তালুচ পশ্চিমপাড়ার আবদুর রহিমের ছেলে মোসলেম উদ্দিন ও তালুচ বাজার এলাকার নারায়ণ রবিদাসের ছেলে সুমন রবিদাস (৩০)। এর মধ্যে গত শুক্রবার বিকালে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মেহেদী হাসানের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মোসলেম উদ্দিন।