জনগণের করের টাকা যারা ব্যবহার করেন তাদের অবশ্যই দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। শুধু দায়িত্বশীল হলেই হবে না, কীভাবে এই অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে তার জবাবদিহিতা থাকা উচিত বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের বৈধতার প্রশ্নে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
রিটকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মুহাম্মদ রাসেল।
আদালত বলেছেন, “যেহেতু ১৩৮ জনের নিয়োগ হয়নি, সেহেতু এই রুলের কোনো সারবত্তা (সারগর্ভ) নেই। যারা আবেদনকারী তারা যদি আবেদন করেন এবং অন্য কোনো কারণে যদি অযোগ্য না হন তাহলে সেসব আবেদন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করতে পারে।”
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এক রিট আবেদনের প্রেুক্ষিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে ব্যবস্থা না নেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।
একইসঙ্গে তার মেয়াদের শেষের দিকে ওই বছরের ৫ মে কর্মকর্তা ও কর্মচারী হিসাবে ১৩৮ জনকে দেওয়া সব নিয়োগ স্থগিত করেন আদালত। এছাড়া ২০১৭ সালের শিক্ষক নিয়োগের বিশ্ববিদ্যালয় নীতিমালাও স্থগিত করে আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কামরুল হোসেন মোলার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে অধ্যাপক এম আবদুস সোবহানের শেষ কর্মদিবস ছিল ২০২১ সালের ৬ মে। ওইদিন দুপুরে পুলিশ পাহারায় ক্যাম্পাস ত্যাগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী বিহাস এলাকায় নিজের বাসায় গিয়ে ওঠেন তিনি।
তার ক্যাম্পাস ত্যাগের পর জানা যায়, আগের দিনের তারিখ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক-কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদে বেশ কিছু নিয়োগ দিয়ে গেছেন তিনি।
নিয়োগের খবর জানাজানি হলে নিয়োগপ্রাপ্ত ও নিয়োগবঞ্চিত ছাত্রলীগের দুপরে মধ্যে ক্যাম্পাসে সংঘর্ষ হয়। বিুব্ধ হয়ে ওঠে প্রগতিশীল শিক সমাজের দুর্নীতিবিরোধী পক্ষ। বিষয়টি জেনে ওইদিন সন্ধ্যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় অধ্যাপক আবদুস সোবহানের শেষ কর্মদিবসে দেওয়া নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা দিয়ে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।
কমিটির আহ্বায়ক করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীরকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. আবু তাহের, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জাকির হোসেন আকন্দ ও ইউজিসির পরিচালক জামিনুর রহমান।
কমিটিকে অবৈধ এসব নিয়োগে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়, তার সুপারিশ দিতেও বলা হয়। সরেজমিন তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৩ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় এই কমিটি।