ঢাকা,  বুধবার  ১২ মার্চ ২০২৫

নিউজ জার্নাল ২৪ :: News Journal 24

স্বাধীনতার সূচকে সবচেয়ে বেশি উন্নতি হওয়া দেশের তালিকায় বাংলাদেশ

নিউজ জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৪৪, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

স্বাধীনতার সূচকে সবচেয়ে বেশি উন্নতি হওয়া দেশের তালিকায় বাংলাদেশ

ছবি সংগৃহীত

ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ফ্রিডম হাউস প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে

বিশ্বজুড়ে মানুষের স্বাধীনতা চর্চার অধিকার কমার মধ্যেও ২০২৪ সালে স্বাধীনতার সূচকে অগ্রগতি হয়েছে বাংলাদেশের। বাংলাদেশের স্কোর ৫ বেড়ে এখন ১০০ এর মধ্যে ৪৫। ২০২৩ সালে এ স্কোর ছিল ৪০।

রাজনৈতিক অধিকার চর্চায় বাংলাদেশের স্কোর ৪০ এর মধ্যে ১৬ এবং নাগরিক স্বাধীনতা চর্চায় স্কোর ৬০ এর মধ্যে ২৯।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ফ্রিডম হাউসের বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

২০২৪ সালে স্বাধীনতার সূচকে সবচেয়ে বেশি উন্নতি হওয়া চার দেশের মধ্যে তিনটিই দক্ষিণ এশিয়ার। দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, ভুটান এবং শ্রীলঙ্কা। অন্য দেশটি হচ্ছে সিরিয়া।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে টানা ১৯ বছরের মতো বিশ্বজুড়ে মানুষের স্বাধীনতা চর্চার অধিকার কমেছে। এর মধ্যেই অগ্রগতি হয়েছে বাংলাদেশের। তবে স্বাধীনতার সূচকে সবচেয়ে বেশি উন্নতি হওয়া দেশগুলোর তালিকায় নাম থাকলেও বাংলাদেশ এখনো রাজনৈতিক অধিকারচর্চা ও নাগরিক স্বাধীনতার চর্চায় “আংশিক স্বাধীন” দেশ।

ফ্রিডম হাউস প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে স্বাধীনতার সূচকে দুটি দেশ নতুন করে “স্বাধীন” দেশের শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। দেশ দুটি হলো সেনেগাল ও ভুটান।

এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার শ্রেণিতে অবস্থান পরিবর্তন না হলেও ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনের এ দুই দেশের বড় ধরনের উন্নতি লক্ষ করা গেছে।

বাংলাদেশে গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি প্রায় ১৫ বছর বাংলাদেশের ক্ষমতায় ছিলেন। এছাড়া গত বছরের ডিসেম্বরে সিরিয়ার দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদের পতন হয়। ইসলামপন্থী যোদ্ধারা তাকে উৎখাত করেন। তিনিও দেশে ছেড়ে পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনেগালে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ভোট পিছিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বিরোধীদের আন্দোলনের মুখে সেই অপচেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং ভোটে বিরোধীরা জয়ী হন।

আর ভুটান প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সুসংহত করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র ভুটানই “স্বাধীন” দেশের শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসেন প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে। অনূঢ়ার জয়ের মধ্য দিয়ে দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে চলা দুই দলের আধিপত্যে ভাঙন ধরেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশ ও অঞ্চল মিলিয়ে তালিকায় সবচেয়ে বেশি উন্নতি হয়েছে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে। ৩৮ স্কোর নিয়ে কাশ্মীর এখন “আংশিক স্বাধীন”। ২০১৯ সালে ভারত সরকার মুসলিম অধ্যুষিত ওই অঞ্চলটির বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার পর গত বছর সেখানে প্রথমবার বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে।

তবে ফ্রিডম হাউসের তালিকায় দেশ হিসেবে ভারতের অবনতি হয়েছে। এ জন্য ভারতের বিচার বিভাগে নিয়োগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। গবেষণা সংস্থাটি ভারতকে “আংশিক স্বাধীন” হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে, স্কোর ৬৩। গত বছর ভারতের স্কোর ছিল ৬৬। ২০২১ সালে ভারত “স্বাধীন” শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত ছিল।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৬০টি দেশে রাজনৈতিক চর্চার অধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতা চর্চার অধিকার কমেছে। আর উন্নতি হয়েছে ৩৪টি দেশে। স্বাধীনতা সূচকে সবচেয়ে বেশি অবনমন হওয়া চার দেশ হচ্ছে এল সালভাদর, হাইতি, কুয়েত ও তিউনিসিয়া। এর মধ্যে এল সালভাদর (স্কোর ৪৭) ও তিউনিসিয়া (স্কোর ৪৪) “আংশিক স্বাধীন”। আর হাইতি (২৪) ও কুয়েত (স্কোর ৩১) “স্বাধীন নয়”।

১৯৫টি দেশ ও ১৩টি অঞ্চলের রাজনৈতিক অধিকার চর্চা ও নাগরিক স্বাধীনতা চর্চা মূল্যায়ন করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন