
ছবি সংগৃহীত
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের মধ্যকার আলোচনায় ডাকা হয়নি খোদ ইউক্রেনকে। এ পরিস্থিতিতে ইউরোপের প্রতিক্রিয়া নিয়ে ফ্রান্সের প্যারিসে জরুরি বৈঠকে বসতে যাচ্ছে ইউরোপীয় পক্ষগুলো। এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, মার্কিন সামরিক সহায়তা বন্ধ হয়ে গেলে তাঁর দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে পড়তে পারে।
এনবিসি নিউজের ‘মিট দ্য প্রেস’ আয়োজনে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে জেলেনস্কি বলেন, ‘সম্ভাবনা বেশ কম। যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়া টিকে থাকার সম্ভাবনা বেশ কম।’
ওয়াশিংটনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক তিক্ত করার মতো উদ্যোগ এরই মধ্যে নিয়ে ফেলেছে জেলেনস্কি প্রশাসন। সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখার বিনিময়ে ইউক্রেনের বিরল মাটির খনিজ সম্পদে অধিকার পাওয়ার প্রস্তাবিত মার্কিন চুক্তি নাকচ করে দিয়েছেন জেলেনস্কি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বিবৃতি, রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত ফোনালাপের পরিপ্রেক্ষিতে জেলেনস্কির এই নাকচ করার ঘটনা কিয়েভের প্রতি ওয়াশিংটনের দীর্ঘমেয়াদি সমর্থনের বিষয়ে নতুন করে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
কিয়েভ যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নিরবচ্ছিন্ন সহায়তা পাবে কি না, সেটা এখনো অনিশ্চিত। না পেলে, সেই শূন্যস্থান পূরণ নিয়ে ইউরোপের দেশগুলোও বেশ চাপে পড়েছে।
১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে ট্রাম্পের পদক্ষেপ ও মন্তব্যের জবাবে ইউরোপের ‘নিজস্ব সামরিক বাহিনী’ গড়ার বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন জেলেনস্কি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, ‘আমরা এই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিতে পারি না, যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি বিষয়ে ইউরোপকে “না” বলতে পারে, যা তাদের জন্য হুমকির।’
ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক ডেপুটি হেড অব জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইহর রোমানেনঙ্কো আল–জাজিরাকে বলেন, ইউরোপের দেশগুলো যে পরিমাণ সহায়তা দিতে চাইছে, ইউক্রেনের প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি।
সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার বিকল্প হতে পারবে না ইউরোপ। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা ছাড়া ইউক্রেন বেশি দিন টিকে থাকতে পারবে না। আমরা সম্ভবত ছয় মাস টিকতে পারব।’
এমন কিছু রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা আছে, যা ইউক্রেনের প্রতি ইউরোপের দেশগুলোর সহায়তায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারে।
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান আর স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো—উভয়ই কিয়েভকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। এ পরিস্থিতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সর্বাত্মক সিদ্ধান্তকে আটকে দিতে পারে। এরই মধ্যে জার্মানির অতি-ডানপন্থী দল এএফডি পার্টি জনমত জরিপগুলোয় এগিয়ে আছে। এটা ইউরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলেছে।