ঢাকা,  বুধবার  ২২ জানুয়ারি ২০২৫

নিউজ জার্নাল ২৪ :: News Journal 24

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের জোরালো সতর্কতা

নিউজ জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭:৪৪, ২০ জানুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১০:২১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের জোরালো সতর্কতা

ফাইল ছবি

৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক কেবল যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই নয়, সারা বিশ্বের জন্যই নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। নতুন দফায় ট্রাম্পের বিদেশ ও যুদ্ধ নীতি কেমন হবে অনেকটা তার ওপরই নির্ভর করছে আগামী দিনের বৈশ্বিক পরিস্থিতি। 

এরই মাঝে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার একদিন আগে ওয়াশিংটন ডিসি’র ক্যাপিটল ওয়ান এরিনায় আয়োজিত এক বিজয় সমাবেশে বিশ্বব্যাপী চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরেছেন ট্রাম্প। 

এসময় বিশ্ববাসী এই মুহূর্তে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে আছে বলে সতর্কতা জানান ট্রাম্প। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠার পক্ষে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঠেকিয়ে দেয়ার বলিষ্ঠ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। 

একই সাথে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রায় তিন বছর ধরে চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ এবং গাজা যুদ্ধসহ মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীলতা বন্ধেরও প্রতিশ্রুতি দেন ট্রাম্প। তিনি ক্ষমতায় থাকলে এসব সংঘাতের সৃষ্টি হতো না বলে জানান। তিনি বলেন, 'আমি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করবো। মধ্যপ্রাচ্যের বিশৃঙ্খলা থামাবো। একই সাথে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঠেকাবো আমি। আপনাদের কোনো ধারণাই নেই, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কতোটা কাছাকাছি আমরা'। 

মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বরাবরই সাফল্যের সাথে কাজ করে গেছেন উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, ইসরাইল ও হামাসের মাঝে এই মুহূর্তে যে যুদ্ধবিরতি চলছে, সে ক্ষেত্রেও তার অবদান আছে। 

সমাবেশে বিশ্বমঞ্চে যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তি নষ্ট করায় জো বাইডেন প্রশাসনের ব্যাপক সমালোচনা করেন ট্রাম্প। বিশেষ করে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া ও সেখানে বিপুল সামরিক সরঞ্জাম ফেলে আসায় বাইডেন প্রশাসনকে তুলোধুনো করেন তিনি। বলেন, 'তালেবানদের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্র সরঞ্জাম দিয়ে এসেছে তারা। বিপুল সমরাস্ত্র দিয়ে এসেছে শত্রুদের হাতে। আমরা প্রতি বছর আফগানিস্তানকে এমনিতেই বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার অনুদান দেই। তাদের বলতে হবে, আমরা এই অর্থ দেবো না, যতোক্ষণ না আমাদের সামরিক সরঞ্জাম ফেরত না দেয়'। 
 
এদিকে একই সমাবেশে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আগামীতে ট্রাম্প কী পরিকল্পনা নিয়ে এগোবেন তার খানিকটা তুলে ধরেন মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ। তিনি জানান, এ যাত্রায় আগের মেয়াদে হাতে নেয়া আব্রাহাম অ্যাকর্ড বাস্তবায়নে জোরেসোরে কাজ করবেন ট্রাম্প। 

আব্রাহাম অ্যাকর্ড মূলত ইসরাইলের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তি, যার মধ্য দিয়ে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো ইসরাইলকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। এরই মাঝে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মরক্কো ও সুদান এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের লক্ষ্য থাকবে এই মেয়াদে সৌদি আরবকে এর আওতায় আনা। 

তবে ইসরাইল ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দিলে আব্রাহাম অ্যাকর্ডে স্বাক্ষর করবে না বলে স্পষ্টভাবে জানিয়েছে সৌদি আরব। অনেক বিশ্লেষকের মতে, ট্রাম্পের আগের মেয়াদে হাতে নেয়া এই আব্রাহাম অ্যাকর্ডে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার বিষয়টিকে উপেক্ষা করার জেরেই নিজেদের অবস্থান জানান দিতে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে প্রাণঘাতী হামলা চালায় ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো। ফলে আগামীতে ফিলিস্তিনকে পাশ কাটিয়ে এই চুক্তি বাস্তবায়নের দিকে এগোলে পরিস্থিতি নতুন করে আরো জটিল হয়ে উঠতে পারে।

 

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন