ফাইল ছবি
গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী বেশকিছু নামি ব্র্যান্ড বয়কটের শিকার হয়েছে, যার অন্যতম কোকা-কোলা। বিশেষ করে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে এ কোমল পানীয়ের প্রতি অনাগ্রহ দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) তুরস্ক ও পাকিস্তানে কোকা-কোলার বিক্রি কমেছে ডাবল ডিজিটে। খবর এজিবিআই।
প্রতিবেদন অনুসারে, গত প্রান্তিকে তুরস্কে এ সফট ড্রিংকস জায়ান্টের বিক্রি কমেছে ১১ দশমিক ২ শতাংশ। অন্যদিকে পাকিস্তানে এ হার ২২ দশমিক ৯ শতাংশ।
ইস্তানবুলভিত্তিক কোকা-কোলা আইসসেক (সিসিআই) জানিয়েছে, তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা অন্য আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি বেড়েছে ১ দশমিক ৩ শতাংশ। এর মধ্যে ইরাক ও আজারবাইজানে শক্তিশালী পারফরম্যান্সের পাশাপাশি বিক্রি পুনরুদ্ধার হয়েছে কাজাখস্তানে।
সিসিআইয়ের সিইও করিম ইয়াহি জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের সঙ্গে মূল্যস্ফীতির সম্মিলিত প্রভাব পড়েছে কোকা-কোলার বিক্রিতে। এ কারণে বিক্রিতে উল্লেখযোগ্য পতন ঘটেছে।
সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া প্রান্তিকে ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় সিসিআইয়ের সামগ্রিক বিক্রি কমেছে ৯ দশমিক ২ শতাংশ। এ সময় নিট মুনাফা ৬১ শতাংশ কমে হয়েছে ৫১৭ কোটি লিরা বা ১৫ কোটি ১০ লাখ ডলার, যা বাজার প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম।
তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক ফলাফলের ভিত্তিতে পূর্ণ-বছরের বিক্রির পূর্বাভাস সংশোধন করেছে কোকা-কোলা। এর আগে সিঙ্গেল ডিজিটে ন্যূনতম পর্যায়ে বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হলেও এখন বলা হচ্ছে, বিক্রি সংকোচন হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান জেপি মরগানের পূর্বাভাস অনুসারে, তুরস্কের অর্থনৈতিক ধীরতার কারণে আরো দুটি প্রান্তিকে বিক্রিজনিত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে কোকা-কোলা।
এদিকে এ ব্র্যান্ডের যুক্তরাজ্যভিত্তিক বোতলজাত ইউনিট কোকা-কোলা ইউরোপ্যাসিফিক পার্টনার্স বার্ষিক বিক্রির পূর্বাভাস সংশোধন করে কমিয়ে এনেছে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ইউরোপে পানীয়ের চাহিদা হ্রাসের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের প্রতিক্রিয়ায় ইন্দোনেশিয়ার ভোক্তারা কোকা-কোলা কম কিনছেন।
কোকা-কোলা ছাড়াও ম্যাকডোনাল্ডস, কেএফসি ও স্টারবাকসের মতো মার্কিন ব্র্যান্ডগুলো গাজায় ইসরায়েলের হামলার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তেল আবিবের সম্পর্কের কারণে মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ায় এসব চেইনের বিক্রি কমেছে।
গত মাসে কোকা-কোলা জানিয়েছিল, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় আয় কমেছে ৭ শতাংশ। অন্যদিকে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে ৪ শতাংশ কমেছে।
কোকা-কোলার প্রতিদ্বন্দ্বী পানীয় জায়ান্ট পেপসিকো জানিয়েছে, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় বিক্রি কমেছে ৪ শতাংশ। ভূরাজনৈতিক কারণে বিক্রি কমার বিষয়টি স্বীকার করে পেপসিকোর সিইও র্যামন লাগুয়ার্তা বলেন, ‘আমি মনে করি না যে আগামী কয়েক মাসে এ অবস্থার পরিবর্তন হবে।’
কেএফসি, পিৎজা হাট, ক্রিস্পি ক্রেম ও হার্ডিসের মধ্যপ্রাচ্য ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক আমেরিকানা রেস্টুরেন্টস সম্প্রতি জানিয়েছে, বয়কটের কারণে তাদের মুনাফার বড় অংশ কমেছে।