পর্যটকদের সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যেতে নিবন্ধন ও ট্রাভেল পাস নিতে হবে— সরকারের এমন সিদ্ধান্তে হতাশ দ্বীপবাসী। তারা বলছেন, পর্যটক খাতে ব্যাপক প্রভাব পড়বে এ সিদ্ধান্ত। তিগ্রস্ত হবেন পর্যটন ব্যবসার ওপর নির্ভরশীল দ্বীপের মানুষ।
সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে যাওয়া পর্যটক ও অনুমোদিত জাহাজ নিয়ন্ত্রণে যৌথ কমিটি গঠন করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেন্টমার্টিনে যেতে হলে পর্যটকদের নিবন্ধনসহ নানান বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে।
সেন্টমার্টিনের স্থানীয় মেম্বার সৈয়দ আলম বলেন, ‘পর্যটন মৌসুমের দুই মাস পার হয়েছে, এখন পর্যন্ত একচন পর্যটকও দ্বীপে ভ্রমণে আসেননি। দ্বীপের পর্যটন ব্যবসায়ীরা ঋণ ও ধারদেনা করে লাখ লাখ টাকা পুঁজি খাটিয়ে হোটেল-রেস্তোরাঁ খুলেছেন। এরই মধ্যে সরকারের প থেকে নানান নাটকীয়তার মাধ্যমে জানানো হয়, সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের ভ্রমণে যেতে নিবন্ধন ও ট্রাভেল পাস লাগবে। এরকম সিদ্ধান্তে দ্বীপবাসী খুবই হতাশ। এতে দ্বীপে পর্যটক আসা বন্ধ হয়ে যাবে। পর্যটকরা দ্বীপে ভ্রমণে আসতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। দ্বীপের পর্যটন নির্ভরশীল ৮০ শতাংশ মানুষ তিগ্রস্ত হবে।’
সেন্টমার্টিন জেটিঘাটের শ্রমিক জানান, ‘দ্বীপে পর্যটক এলে তাদের ব্যাগ-ট্রলিসহ হোটেলে পৌঁছে দিলে টাকা পেতাম। সে টাকায় পরিবারের খরচ জোগাড় হতো। এখন পর্যটন মৌসুমের দুই মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো পর্যটক নেই। দ্বীপে পর্যটক আসার েেত্র বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করলে আমরা দ্বীপবাসী তিগ্রস্ত হবো।’
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, পর্যটননির্ভর দ্বীপের মানুষ বর্তমানে অনেক কষ্টে আছেন। সরকারের নানান বিধিনিষেধ দ্বীপের মানুষের কষ্ট আরও বাড়িয়ে দিলো।
তিনি বলেন, অক্টোবর থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারাও জরুরি প্রয়োজনে কাঠের ট্রলার বা স্পিডবোটে টেকনাফ আসা-যাওয়া করতে পারছেন না। তাদেরও টেকনাফে আসা বা যাওয়ার েেত্র প্রশাসনের অনুমতি নিতে হচ্ছে।
সরকারের এ সিদ্ধান্ত সেন্টমার্টিনে পর্যটন খাতের ওপর প্রভাব পড়বে জানিয়ে কক্সবাজার অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (টুয়াক) সাবেক প্রেসিডেন্ট (বর্তমানে কমিটির উপদেষ্টা) মো. আনোয়ার কামাল বলেন, পর্যটকদের নিবন্ধন ও ট্রাভেল পাসে সেন্টমার্টিনে যাওয়া মানে নিজ দেশে ভিসা নিয়ে বিদেশ ভ্রমণ করার মতো সিদ্ধান্ত, যার প্রভাব পড়বে পর্যটন খাতে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, সেন্টমার্টিনে কখন পর্যটকবাহী জাহাজ যাবে বা কোন ঘাট দিয়ে যাবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। জাহাজ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ঢাকায় আবেদন করেছে। শিগগির এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।