ফাইল ছবি
জনপ্রিয় অভিনেতা আহমেদ রুবেল (আহমেদ রাজিব রুবেল) মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর। আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি মাল্টিপ্লেক্সে নুরুল আলম আতিকের নতুন সিনেমা ‘পেয়ারার সুবাস’- এর একটি বিশেষ প্রদর্শনীতে যাওয়ার কথা ছিল এই অভিনেতার। ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। ছবিটির প্রদর্শনীতে যোগ দেওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে অনুষ্ঠানস্থলের পার্কিং- এ গিয়েছিলেনও তিনি। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে গেলে সেখান থেকে তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সেলিম আল দীনের ‘ঢাকা থিয়েটার’ থেকে আহমেদ রুবেলের অভিনয়ের হাতেখড়ি। তার অভিনীত প্রথম নাটক গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘স্বপ্নযাত্রা’। এরপর তিনি হুমায়ূন আহমেদের ঈদনাটক ‘পোকা’তে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এই নাটকে ‘গোরা মজিদ’ চরিত্রটি অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
২০০৫ সাল থেকে টেলিভিশন নাটকে নিয়মিত অভিনয় করতেন। ঢাকা থিয়েটারের সদস্য হিসেবে দীর্ঘদিন মঞ্চেও কাজ করেছেন। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটক ‘অতিথি’, ‘নীল তোয়ালে’, ‘বিশেষ ঘোষণা’, ‘প্রতিদান’, ‘নবাব গুণ্ডা’ ও ‘এফএনএফসহ আরও অনেক নাটকে অভিনয় করেন। একুশে টেলিভিশনের ধারবাহিক নাটক ‘প্রেত’-এ অভিনয় করেও জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন এই অভিনেতা। জনপ্রিয় নির্মাতা ও সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের বেশকিছু নাটকেও অভিনয় করেন তিনি। এই নির্মাতার ‘শ্যামল ছায়া’ ও ‘চন্দ্রকথা’ ছবিতেও অভিনয় করেন আহমেদ রুবেল।
মঞ্চ ও টিভি পর্দার এই অভিনেতা ১৯৯৩ সালে ‘আখেরী হামলা’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্র অঙ্গণে পা রাখেন। একে একে অভিনয় করেন ‘ব্যাচেলর’, ‘গেরিলা’, ‘দ্য লাস্ট ঠাকুর’ সিনেমায়। ২০১৪ সালে ভারতের নির্মাতা সঞ্জয় নাগ পরিচালিত ‘পারাপার–এর প্রধান চরিত্রে অভিনয় করে দারুণ আলোচিত হোন।
দীর্ঘদিন অভিনয় থেকে দূরে থাকলেও সর্বশেষ তিনি নুরুল আলম আতিকের পরিচালনায় ‘পেয়ারার সুবাস’ ছবিতে ভিন্ন ও একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করে আবারও আলোচনায় আসেন। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি ছবিটি মুক্তি পাবে। সে উপলক্ষে আজ সন্ধ্যায় একটি বিশেষ প্রদর্শনীতে উপস্থিত থাকার কথা ছিল এই অভিনেতার। তার আগেই পৃথিবী থেকে চিরতরে চলে গেলেন তিনি।
আহমেদ রুবেল ১৯৬৮ সালের ৩ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের রাজারামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আয়েশ উদ্দিন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের ইসলামপুর মহল্লায় তাঁর মাতুলালয় (নানির বাড়ি)। পিতা–মাতার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে হলেও ছোটবেলা থেকেই বেড়ে উঠেছেন ঢাকা শহরে, বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে ঢাকার গাজীপুরে স্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন তিনি।