
ছবি:নিউজ জার্নাল ২৪
ভোলা জেলার কৃষি খাতে নতুন সম্ভাবনার সূচনা করেছে তরমুজ চাষ। অনুকূল আবহাওয়া, উন্নত কৃষি প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং কৃষি বিভাগ ও এনজিওগুলোর কার্যকর সহায়তায় এবার রেকর্ড পরিমাণ তরমুজ উৎপাদিত হয়েছে। সুস্বাদু ও রসালো তরমুজে ভরে গেছে স্থানীয় বাজার, যা রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেটসহ দেশের অন্তত ১২টি জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। এক সময় নদী ও প্রকৃতির জন্য পরিচিত ভোলা, আজ সুস্বাদু তরমুজের জন্যও বিশেষ খ্যাতি অর্জন করছে।
এই বছর তরমুজের উৎপাদন কৃষকদের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। অনুকূল আবহাওয়া ও উর্বর মাটির পাশাপাশি আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতির কারণে কৃষকরা পেয়েছেন আশাতীত ফলন। মাঠ পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও বিভিন্ন এনজিও—বিশেষ করে গ্রামিণ জন উন্নয়ন সংস্থার (জিজেইউএস) কার্যকর সহায়তা কৃষকদের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
গত বছরের কিছুটা প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত ক্ষতির পর এবার বাম্পার ফলন কৃষকদের মাঝে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। বাজারে তরমুজের চাহিদা ও ন্যায্য মূল্য পাওয়া কৃষকদের স্বস্তি এনে দিয়েছে। ফলে তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন—ফসল সংগ্রহ, পরিবহন ও বাজারজাতকরণের কাজে।
ভোলার সাত উপজেলায় এবার ১৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে প্রায় ৩৫ হাজার কৃষক তরমুজ চাষ করেছেন, যা থেকে উৎপাদিত হবে প্রায় ৭ লাখ ২ হাজার মেট্রিক টন তরমুজ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, প্রতি হেক্টর জমিতে ৫২ থেকে ৬০ মেট্রিক টন তরমুজ উৎপাদিত হচ্ছে, যার সম্ভাব্য বাজারমূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
ভোলা জেলার উপ-পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ড. শামীম আহমেদ বলেন, "এবারের তরমুজ উৎপাদন ভোলার কৃষি খাতে একটি মাইলফলক। কৃষকরা আধুনিক প্রযুক্তি ও সঠিক কৃষি ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করায় ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সাফল্য ভবিষ্যতে তরমুজ চাষকে আরও প্রসারিত করবে।"
অত্যন্ত লাভজনক ফলন ও বাজারমূল্যের কারণে কৃষকদের মধ্যে তরমুজ চাষে নতুন আগ্রহ তৈরি হয়েছে। এ বছর কৃষকদের সাফল্য শুধু তাদের জীবনমান উন্নত করবে না, বরং ভোলার অর্থনীতিতে নতুন গতি সঞ্চার করবে এবং সম্ভাবনাময় কৃষিখাতকে আরও সমৃদ্ধ করবে।