ঢাকা,  শনিবার  ২৩ নভেম্বর ২০২৪

নিউজ জার্নাল ২৪ :: News Journal 24

বাজারে চড়া দামেও পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন নাইক্ষ্যংছড়ির কৃষকেরা

নিউজ জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:০২, ৩ জানুয়ারি ২০২৩

বাজারে চড়া দামেও পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন নাইক্ষ্যংছড়ির কৃষকেরা

ছবি সংগৃহীত

বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় পান চাষ বেশ পুরোনো। এই উপজেলায় পান চাষের সঙ্গে জড়িত প্রায় পাঁচ শতাধিক কৃষক। প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর কৃত্রিম সমস্যার কারণে দিন দিন এই কৃষি উৎপাদন থেকে ছিটকে পড়ছে অনেক পান চাষি। গেল বছর ভারি বর্ষণ ও প্রাকৃতিক বালাইয়ে উপজেলার প্রায় ২৫টি পান বরজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফলে দিন দিন পান চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন স্থানীয় চাষিরা।

পান বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল। বছরজুড়ে এর সমান চাহিদা থাকায় বাজারে পাওয়া যায় ভালো দাম। পান গাছ যেহেতু একই জমিতে বহু বছর ধরে চাষ হয়, সেহেতু কৃত্রিম ছায়াযুক্ত আর্দ্র পরিবেশে বরজ বা প্যান্ডেলের মধ্যে চাষ করা হয়। সার ও কীটনাশক গুলো পান গাছের গোড়ার মাটিতে ও ভাটিতে দেওয়া হয়। তাই এই গাছের রোগ ও পোকার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি এবং পান গাছে একবার রোগ লেগে গেলে সহজে সারানো যায় না। এই জন্য সঠিক পরিচর্যা, সুষম সারের ব্যবহার, সঠিক সময়ে সঠিক মাত্রায় ঔষধ প্রয়োগ অর্থাৎ সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গাছকে সতেজ, সুস্থ, সবল, রোগ-পোকা প্রতিরোধক্ষম করে তুলতে হবে। ফলে রোগ পোকা কম হবে, খরচ কমে যাবে। ফলন বেশি হবে ও ভাল দাম পাওয়া যাবে। যদিও পান চাষ যথেষ্ট লাভজনক তবু এ চাষে বেশি পরিশ্রম ও  যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ লগ্নী করার এবং বেশ যত্নের সাথে চাষ করার প্রয়োজন হয়। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমেই একমাত্র রোগমুক্ত, সুস্থ-সবল পান উৎপাদন করা সম্ভব। 

স্থানীয় পান চাষিরা জানান, "বর্তমানে আনুমানিক ৪০০ জন কৃষকের পান বরজ রয়েছে। কোনো একসময় এই এলাকায় ৪০ শতাংশ পরিবার পানের বরজে পান চাষ করলেও দিন দিনই তা কমে এসেছে। পান চাষ ছেড়ে বরজগুলোতে কেউ কেউ করছেন অন্য ফসলের চাষ। কেউ কেউ রোপণ করেছেন বিভিন্ন প্রজাতির গাছ।"

কৃষক আবুল কালাম বলেন, "এখন শীত মৌসুমে পানের বর্ধন কম তাই দামও বেশী। অন্য দিকে সারাবছর পানির দামে পান বিক্রি করতে হয়। তাই পরিশ্রম আর খরচের তুলনায় পান চাষ করে তেমন লাভবান হওয়া যাচ্ছে না। তাই পান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি।"

উপজেলার সোনাইছড়ির অনি অং মার্মা জানান, "আমার এলাকায় ২৫ টি পানের বরজ রয়েছে। একসময় কয়েক শত বরজ ছিলো। অনেকে এই পানের বরজে স্থানে ঘর তৈরি করেছে। পেঁপে বাগানসহ অধিক লাভজনক ফল চাষ করেছে।"

উপজেলা এক কৃষি উদ্যোক্তা জানান, একই জমিতে বার বার পান চাষ করলে সেই জমিতে ফলন ভালো হয় না। এমনকি এসব জমির পান বরজে কাণ্ডপঁচা ও পাতাপঁচা রোগের উপস্থিতি বেশি। যার কারণ ফলনও ভালো হয় না, এতে পান চাষি আশানুরূপ ফলন পান না।"

বর্তমানে সময়ে সারের দাম, শ্রমিকের মজুরি, মা পান গাছের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন। না হলে এভাবেই একসময় পান চাষ হারিয়ে যাবে বলে জানান কৃষকরা।

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন