ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ডিএনসিসি এলাকার ৩৫ হাজার রিকশাচালকদের বিনামূল্যে একটি করে ছাতা, ১২ প্যাকেট খাবার স্যালাইন ও একটি হাফ লিটার পানির কনটেইনার দেওয়া হবে। তীব্র তাপদাহে রিকশাচালক ভাইদের খুব কষ্ট হয়।
প্রচণ্ড রোদে তারা যদি অসুস্থ হয়ে যায় তাহলে পুরো পরিবারের জন্য অনেক সমস্যা। রোদের কারণে তারা যদি রিকশা চালাতে না পারে, তারা যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে তাহলে তাদের পরিবার কিন্তু চলতে পারবে না। কারণ অনেক রিকশাচালকের দৈনিক ইনকামের ওপরে তাদের পরিবার চলে। তাই তীব্র তাপদাহে তাদের কষ্টের বিষয় চিন্তা করে এ উদ্যোগ নিয়েছি।
রোববার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশান-২ নগর ভবনের সামনে রিকশাচালকদের মাঝে ছাতা বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ছাতা বিতরণ কার্যক্রমটি দেখতে আসেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান, আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জুলকার নায়েন, বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ, ফিলিস্তিনের উপ-রাষ্ট্রদূত।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ছাতাটা আমরা বিশেষভাবে তৈরি করেছি। এটা অ্যাডজাস্টেবল। কোনো রিকশাচালক লম্বা হলে ছাতার উচ্চতা বাড়িয়ে নিতে পারবে, কেউ উচ্চতায় কম হলে কমিয়ে নিতে পারবে। প্রত্যেককে হাফ লিটার পানির কনটেইনার দিচ্ছি। এতে একটি স্যালাইন মিশিয়ে খেতে পারবে। এক লিটার কনটেইনার দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম কিন্তু স্যালাইন মিশিয়ে খাওয়ার বিষয় বিবেচনা করে হাফ লিটার কনটেইনার দিচ্ছি।
এ বিষয়টিও চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিনের পরামর্শে করা হয়েছে বলে জানান মেয়র।
তিনি বলেন, স্প্রে ক্যাননের মাধ্যমে পানি ছিটানোর কাজটি চলমান থাকবে। পার্কগুলোতেও পানির স্প্রে করা হবে। যদিও পার্কে স্প্রে করার কাজটি ব্যয়বহুল। আমি আহŸান করছি, কেউ চাইলে সহযোগিতা করতে পারেন। কেউ ছাতা দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করতে পারেন। অনেক কোম্পানি অথবা ব্যক্তি এগিয়ে আসতে পারেন।
মেয়র বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি বিশেষ ভ্যানগাড়ি (৫০০ লিটার পানির ট্যাংক সম্বলিত) পথচারীদের পানি পান করানোর জন্য নামানো হয়েছে। ভ্যানগুলো বিশুদ্ধ খাবার পানি নিয়ে ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরবে। এ ভ্যানগুলো ছোট আকারের করা হয়েছে যেন শহরের অলিগলিতে প্রবেশ করতে পারে। পথচারী ও শ্রমজীবী মানুষ যেন পানি খেতে পারে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা গত বছর ৮০ হাজার গাছ লাগিয়েছি। এ বছর আরও এক লাখ ২০ হাজার গাছ লাগাবো। কিছু কিছু জায়গায় গাছ মারা গেছে। আসলে আমাদের আগে গাছের পরিচর্যার জন্য মালি ছিল না। ৪৭ জন মালি ও তিনজন সুপারভাইজার নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন। মালি নিয়োগ হয়ে গেলে পরিচর্যা জোরদার করা হবে। আমি নগরবাসীকেও অনুরোধ করছি গাছগুলো দেখে রাখার জন্য। সিটি করপোরেশন পরিচর্যা করছে। পাশাপাশি নগরবাসী যার যার বাড়ির সামনে, দোকানের সামনে যে গাছগুলো আছে সেগুলোর যতœ নেবেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে ডিএনসিসি মেয়র রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে নিয়ে কয়েকজন রিকশাচালকদের মাঝে ছাতা, স্যালাইন ও পানির কনটেইনার বিতরণ করেন। এ সময় ডিএনসিসি মেয়র নিজ হাতে স্যালাইন মিশিয়ে একজন রিকশা চালককে পান করিয়ে কার্যক্রমটি উদ্বোধন করেন।
পরে মেয়র রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে নিয়ে গুলশান-২ গোল চত্বরে স্প্রে ক্যাননের পানি ছিটানোর কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী, ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মফিজুর রহমান, সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর আমেনা বেগম প্রমুখ।