
ফাইল ছবি
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে কর্মরত থাকা যুগ্মসচিব পদমর্যাদার ৩৩ কর্মকর্তাকে একযোগে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওএসডি করেছে সরকার।
এসব কর্মকর্তারা ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন বলে জানা যাচ্ছে।
যদিও আজ যে ছয়টি প্রজ্ঞাপন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জারি করেছে তাতে এ সম্পর্কিত কোনো তথ্য দেয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, ‘ওএসডি’ একটি বিশেষ ধরনের পোস্টিং এবং এর পূর্ণরূপ হলো ‘অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি’ বা বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
ব্রিটিশ শাসনামলে তৎকালীন ভারতীয় সিভিল সার্ভিসে ওএসডি’র বিধান চালু করা হয়, যার চর্চা পাকিস্তান আমলেও বলবৎ ছিল। অতীতের রীতি মেনে স্বাধীন বাংলাদেশেও সরকারি কর্মকর্তাদেরকে ওএসডি করার নিয়ম রাখা হয়।
সেই ধারাতেই একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় দায়িত্ব পালন করা জেলা প্রশাসকদের ওএসডি করলো সরকার।
২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেছিলো আওয়ামী লীগ। তবে এই নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রশ্ন ও বিতর্ক রয়েছে।
এর আগের অর্থাৎ ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করলেও ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলো বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো। কিন্তু ওই নির্বাচনে ভোটগ্রহণের আগের রাতেই ব্যালট বাক্স ভর্তি করে রাখার অভিযোগ ওঠে তখনকার সরকারি দলের বিরুদ্ধে।
ভোট শুরুর আগের মুহূর্তে চট্টগ্রামের একটি কেন্দ্রে বিবিসি বাংলার সাংবাদিকের ক্যামেরায়ও ধরা পড়েছিলো ব্যালট ভর্তি বাক্স। নির্বাচনের ফলাফলও ছিল সম্পূর্ণ এক পাক্ষিক। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জোটসঙ্গীরা ২৮৮টি আসন পায়।
আর বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্ট পায় মাত্র সাতটি। বাকি তিনটি আসন পায় অন্যান্যরা। অনেক ভোট কেন্দ্রে একশো' ভাগ ভোট পড়ে বলে ফলাফলে দেখা যায়। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর বাইরে অন্য কেউ ভোট পাননি অনেক কেন্দ্রে।
নির্বাচনের ছয় মাস পরে নির্বাচন কমিশন কেন্দ্র-ভিত্তিক যে ফলাফল প্রকাশ করে, তা পর্যালোচনা করে সুজন নামের একটি সংগঠন যে প্রতিবেদন প্রকাশ করে, তাতে দেখা যায় যে ৭৫টি আসনের ৫৮৬টি কেন্দ্রে যত বৈধ ভোট পড়েছে, তার সবগুলোই আওয়ামী লীগের অর্থাৎ নৌকা মার্কার প্রার্থীরা পেয়েছেন।
যদিও নির্বাচনের পরদিন তখনকার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা সংবাদ সম্মেলন করে মোট ভোটারের ৮০ শতাংশ ভোট দিয়েছেন বলে দাবি করেছিলেন।